তিন দিনের অবিরাম বৃষ্টিপাত ও সীমান্ত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে কাচালং নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ির উপজেলার ১৪টি গ্রাম সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়েছে। গ্রামগুলো হলো করেঙ্গাতলী, বাঘাইহাট, বঙ্গলতলী, রূপকারী, কদমতলী, তুলাবান, গুচ্ছগ্রাম, মুসলিম ব্লক, ইমাম পাড়া, মাস্টার পাড়া, গুনিয়া পাড়া, সরকার পাড়া, কলেজ পাড়া ও পুরাতন মারিষ্যা।
পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। পাহাড়ী ঢল নেমে আসায় বাঘাইছড়ির বিস্তৃণ এলাকার কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্ধি মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মার্কেটসহ বিভিন্ন পাকা ভবনে অবস্থান নিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন দূর্গতদের জন্য এখনো কোন ত্রাণ তৎপরতা শুরু করতে পারেনি। তবে স্থানীয় আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে দূর্গতদের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। পাহাড়ী ঢল ও অতি বর্ষনের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি উচ্চতা বাড়তে থাকায় লংগদু, জুরাছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি, নানিয়ারচরের নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি ও কৃষি জমি পানিতে ডুবে গেছে।
এদিকে, নানিয়ারচর উপজেলায় পাহাড় ধ্বসের মাটি চাপায় নিহত ১১ জনের সৎকার মঙ্গলবার সম্পন্ন হয়েছে। রাঙ্গামাটিতে তিন পর বৃষ্টি বন্ধ হওয়ায় জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আর কোথাও পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটেনি। পাহাড় ধ্বসের আশংকায় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেয়া লোকজন বাড়ি ঘরে পুনরায় ফিরতে শুরু করেছে। রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কসহ রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কে যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়েছে।
এব্যাপারে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক এ কে এম মামুনুর রশিদ জানান, বাঘাইছড়িতে পাহাড়ী ঢলে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে সেখানে বসবাসরত মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে। বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে মানুষ আশ্রয় গ্রহন করেছে। তবে এই পানি হচ্ছে পাহাড়ী ঢল তাই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেলে আস্তে আস্তে পানি কমে যাবে এবং গতকাল রাত থেকে বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। তাই যে সমস্ত এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে তা আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে এবং জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে আসছে। তার পরেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি এবং মঙ্গলবার বাঘাইছড়ি উপজেলা নিবার্হী অফিসারকে ১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছি যাতে আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষ এসে খাওয়ার কোন সমস্যা না হয়।